Saturday, March 6, 2010

বাতাসে বসন্ত!

ভাল লাগতেছে না। ঢাকাতে থাকলে এমনদিনে শহীদমিনার কিনবা, শহীদুল্লার পুকুর পারে গিয়ে বসে থাকতাম, কিনবা রাসেল কে সাথে করে ট্যাক্সি ভারা করে এয়ারপোর্ট ঘুরে আসতাম। রাত প্রায় তিনটা বাজে, আচ্ছা ঢাকাতে যারা থাকে সবাই কি জানে গভীর রাতে ঢাকার চেহারাটা দেখতে কেমন? গভীর রাতের ঢাকার এক অদ্ভুত নির্জনতা আছে। আমি খুব অবাক দুই কোটি মানুষের শহর ঢাকা, গভীর রাতে কেমন যেন একাকিত্বে ভোগে। আজকের আব্‌হাওয়াটা কেমন যেন ঢাকার বসন্তের মত। বাতাসে বসন্ত! আহ্‌ কতদিন বাতাসে ভিজা মাটির গন্ধ পাই না, বসন্তের প্রথম বৃষ্টিতে আর ভেজা হয় না। কতদিন কোকিলগুলো আমার ঘুম ভাঙ্গায় না, অনেক কিছুই আর কোনদিন হয়ত পাব না।

ঢাকার ঋতুর সাথে আমার পরিচয় অনেক পরে, আমার কৈশর কেটেছে এক ছোট্ট গলিতে, যেখানে আলো বাতাসের বড়ই অভাব। ছোট্ট সেই গলি থেকে একদিন হঠাৎ করে কিভাবে যেন চলে আসলাম ইউনিভার্সিটিতে আর সেখানেই আমার প্রথম পরিচয় বসন্তের সাথে। হলুদ শারি পরে মেয়েগুলো বসন্তের গান গেয় যেত বটে, তার অনেক আগে থেকেই আমার ছোট্ট জানালায় কোকিলগুলো বসন্তের গান শুনিয়ে যেত। আহসানউল্লার কোকিলগুলোর কোন ঋতুঙ্গান ছিল না, বসন্তের অনেক আগেই কেন যেন ওদের বসন্ত শুরু হয়ে যেত। বড্ড ক্লান্ত লাগছে। সব কিছু ছেরে চলে যেতে ইচ্ছে হচ্ছে।

রাস্তায় হঠাৎ দুই একটা গাড়ী দেখা যাচ্ছে। এই শহরটা যেন কেমন, সকাল বিকাল কোনটাই বোঝার কোন উপায় নাই। সব সময়ই এক। আচ্ছা এই শহরের মানুষগুলোর মন খারাপ হয় না? ওরা কি করে? আমার এই শহর ভাল লাগে না। আমার আসলে কিছুই ভাল লাগে না। আমি খুব ক্লান্ত, আমার খুব চিৎকার করে বলতে ইচ্ছা হয়, আমি খুব ক্লান্ত, আমার একটু বিশ্রাম চাই, হোক খুব অল্প, তাও একটু বিশ্রাম চাই।

খুব বরিশাল যেতে ইচ্ছা হচ্ছে। হঠাৎ করে! চলে যেতে পারতাম। কিনবা সিলেট! কিনবা অন্য কোন জায়গায়! যাওয়া হবে না, হয়ত আর কোনদিনও যাওয়া হবে না। মধ্যবিত্তের সবচেয়ে বড় বিলাসিতা নষ্টালজিয়া, আজকে আমাকে বড় নষ্টালজিয়া্য পেয়ে বসেছে, কিছুই ভাল লাগছে না। বড্ড জোরে গাড়ী ছোটাতে ইচ্ছা হচ্ছে, চলে যেতে পারতাম ঠিক ঐ দিকন্তের কাছে!

1 comment:

Please, no abusive word, no spam.